নিজস্ব প্রতিবেদক । অজানা বাংলাদেশ
আরিফুল ইসলাম সুমন|ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলা সদরের `জাফর খালের’ উপর নির্মিত জনগুরুত্বপূর্ণ দুটি সেতু বর্তমানে জনসাধারণের চলাচলে কোনো উপকারেই আসছে না। সেতু দুটি`র উভয়পাশে সড়কের সংযোগ না থাকায় এ দূর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে এখানকার চার গ্রামের কয়েক হাজার মানুষের চলাচলে প্রতিনিয়ত নানা প্রতিবন্ধকতা সহ এ দুটি সেতু তাদের উপকারে আসছে না।
স্থানীয় লোকজন জানান, জনগুরুত্বপূর্ণ এই সেতু দুটি সরাইল সদরের জনপ্রিয় ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল জব্বারের নামে নামকরণ করা হয়েছে। সেই থেকে সেতু দুটি “আব্দুল জব্বার চেয়ারম্যান সেতু” হিসেবে এলাকায় পরিচিত।
২৫ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) সরেজমিনে এলাকায় গেলে, সৈয়দটুলা গ্রামের মোঃ জাহার মিয়া, লোকমান হোসেন, সুফিয়া বেগম সহ অনেকে জানান, সরকার আমাদের দূর্ভোগের কথা ভেবে কোটি টাকা খরচ করে এখানে এ দুটি সেতু নির্মাণ করিয়ে দিয়েছে। কিন্তু সেতু দুটি`র দুইপাশে সড়কের সংযোগ না থাকায় তা আমাদের চলাচলে কোনো উপকারেই আসছে না। উপরন্ত এখন তা দূর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
নিজসরাইল গ্রামের মোঃ শাহজাহান মিয়া, মোছাঃ রোকেয়া বেগম সহ অনেকে জানান, এই দুটি সেতু আমাদের প্রিয় ও সুযোগ্য ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল জব্বারের নামে নামকরণ। এতে আমরা আনন্দিত। কিছুদিন আগে স্থানীয় সংসদ সদস্য এই দুটি সেতু আনুষ্ঠানিক উদ্ধোধন করেন। অথচ সড়ক সংযোগ না থাকায় সেতু দুটি দিয়ে মানুষেরা যাতায়াত করতে পারছেন না, এ বিষয়টি আমাদের জনপ্রতিনিধিরা দেখেও না দেখার অভিনয় করছেন।
স্থানীয় একাধিক জনপ্রতিনিধি নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, সেতু দুটি নির্মাণকালে তদারকি তেমন করা হয়নি। তড়িঘড়ি ঠিকাদার কাজ শেষে বিল উত্তোলন করে। এর পেছনে কারণও রয়েছে। এই সেতু দুটিতে সরকারি বরাদ্দের পাশাপাশি কৌশলে উপজেলার সংশ্লিষ্ট দফতরের লোকেরা টি.আর, কাবিখা-কাবিটা ও এলজিএসপি প্রকল্প দেখিয়ে তারা ফায়দা নিয়েছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬-২০১৭ অর্থ বছরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের আওতায় এ উপজেলার জাফর খালের উপর সেতু দুটি নির্মিত হয়। যা কিছুদিন আগে আনুষ্ঠানিক উদ্ধোধন করা হয়। একেকটি সেতুর দৈর্ঘ্য ৬০ ফুট এবং নির্মাণ ব্যয় প্রায় ৬০ লক্ষ টাকা। একটি সেতু জেলার আশুগঞ্জ উপজেলার সোহাগপুরের মেসার্স সিকদার ব্রাদার্স ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করে, অপরটি স্থানীয় একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করে।
সরাইল উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন, এ দুটি সেতু এখানকার আগের পিআইও’র আমলে নির্মিত হয়েছে। আমি এখানে যোগদানের পর এসে এ দুটি সেতুর দুইপাশে মাটি দেখেনি, সংযোগ সড়ক পায়নি। স্থানীয় চেয়ারম্যান অচিরেই সেতু দুটির উভয়পাশে মাটি ভরাট করিয়ে সংযোগ সড়ক নির্মাণ করবেন।